বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের থানছিতে বিজিবি ক্যাম্পে ৬টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এসময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরাও পাল্টা দু’টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনার পর জেলার মিয়ানমার সীমান্তাঞ্চলে হেলিকপ্টারে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানো হয়েছে। সীমান্ত জুড়ে সতর্কাবস্থায় রয়েছে বিজিবি। বুধবার রাতে জেলার থানছি-আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী বুলুপাড়া ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার থানছি-আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী বুলুপাড়া এলাকায় বিজিবি ৫৭ ব্যাটেলিয়নের অধীনে নির্মাণাধীন একটি বিজিবি ক্যাম্প লক্ষ্য করে গত বুধবার রাতে ৬টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। শেলগুলো ক্যাম্প থেকে প্রায় একশ গজ দূরত্বে বিজিবি ক্যাম্পের আশপাশে পড়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এসময় ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরাও পাল্টা দু’টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করে। তারপর থেকে আর কোনো ধরনের গোলাগুলি ঘটেনি। মর্টারশেলগুলোর আঘাতের অবস্থান চিহ্নিত করতে বিজিবি কাজ করছে। ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বিজিবি সতর্কবস্থায় রয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে হেলিকপ্টারে সীমান্তঞ্চলে ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজিবি ক্যাম্পগুলোতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার থানছি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তঞ্চলে মিয়ানমার আর্মির একটি দল কয়েকদিন ধরে অবস্থান নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল হাবিবুর রহমান জানান, থানছি-আলীকদম উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তঞ্চলে বিজিবি’র নতুন ছয়টি ক্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন বুলুপাড়া ক্যাম্পে ৬টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে নিক্ষেপ করা গোলাগুলো মর্টারশেল নাকি শেল বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিক্ষেপ করা গোলাগুলো সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। নিরাপত্তা জোরদারে সীমান্তে হেলিকপ্টারে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সীমান্তের ওপারে যেহেতু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে মর্টারশেলগুলো তারাই নিক্ষেপ করেছে। মিয়ানমার সীমান্তঞ্চলের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দু’গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে মর্টারশেলগুলো উদ্দেশ্যবিহীনভাবে নিক্ষেপ করা হয়েছে, নাকি বিজিবি ক্যাম্প লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। সেটি আমাদের দেখার বিষয়ও নয়। যেহেতু বাংলাদেশ সীমান্তের বিজিবি অধীনস্থ এলাকায় মর্টারশেলগুলো পড়েছে, তার পাল্টা জবাব দেওয়া বিজিবির দায়িত্ব। সীমান্তে সতর্কবস্থায় রয়েছে বিজিবি। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে বিজিবি।
২০১৫ সালের জুলাই মাসে থানছি উপজেলার বড় মদক এ বিজিবি ক্যাম্পে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান আর্মি হামলা চালিয়েছিল। এসময় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের গুলিতে কয়েকজন বিজিবি সদস্য আহত হয়েছিল।
পাঠকের মতামত